Thursday, May 29, 2014

জাপানে ব্যাঙ নিয়ে আমাদের গবেষকের সাফল্য...

 জাপানে ব্যাঙ নিয়ে আমাদের গবেষকের সাফল্য...
মো: ইউসুফ আলী, বাকৃবি : ব্যাঙ কিংবা এম্পবিয়িা নিয়ে তেমন কেউ গবেষণা করতে চাননা। বিশেষ করে বাংলাদশের মত অনুন্নত দেশে এটা নিয়ে গবেষণা করা নিত্যন্তই কঠিন। তবে যে কোন দেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করার জন্য ব্যাঙ নিয়ে গবেষণা করা অপরিহার্য। এটি একদিকে যেমন প্রকৃতির জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে পারে তেমনি ক্ষতকির কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

বিশ্বের ৫হাজার ৪৪৩ প্রজাতির ব্যাঙের মধ্যে দেড়’শ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এ বিলুপ্ত প্রাপ্ত প্রজাতির অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়ার। এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানা গেছে, আগামী ২৫ বছরে প্রায় ২ হাজার প্রজাতির ব্যাঙ পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে।
f
প্রকৃতির জন্য উত্তম এ বন্ধুটির নিয়ে দীর্ঘকাল গবেষণা করে নতুন এক প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান পেয়েছেন জাপান প্রবাসী বাংলাদেশী গবেষক মো. মাহমুদুল হাসান। বাংলাদশে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ থেকে স্নাতক শেষ করে ২০০৬ সালে ব্যাঙ নিয়ে গবষেণা শুরু করেন তরুন এ বিজ্ঞানী ।

বাকৃবির প্রয়াত শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. মোখলছেুর রহমান খাঁনের অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশে প্রাপ্ত অজানা প্রজাতির ব্যাঙ নিয়ে গবষেণায় পাড়ি জমান সুদূর জাপান। সেখানে হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এম্পিবিয়ান বায়োলোজিতে প্রায় ৭ বছর গবেষণার পর তিনি এ সফলতা পেয়েছেন।

বাংলাদশে সরকাররে অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশে প্রাপ্ত সম্ভাবনাময় বানিজ্যিক প্রজাতরি ব্যাঙ জীবিত/মৃত কিংবা শুধুমাত্র পায়ের নখের একাংশ জাপানে নিয়ে যান। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশের সকল প্রজাতির ব্যাঙ নিয়ে ২০১২ সালে একটি নিবন্ধন পেপার আর্ন্তজাতকি র্জানালে (Zoological Science, volume 29, page 162-172)) প্রকাশ করেন।

বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যাঙের মোট প্রজাতরি সংখ্যা ৪৩টির বেশি, যার মধ্যে ৮টি ক্রিপটিক প্রজাতি (অনাবিষ্কৃত)। কক্সবাজারের উকূলীয় এলাকা টেকনাফ থেকে দেশের অনাবস্কিৃত ৮টি ব্যাঙের মধ্যে ১টি ব্যাঙ বৈজ্ঞানকি পদ্ধতি বিশ্লেষণ করেন। পরে ব্যাঙটির নামকরণ করেন Hoplobatarchus litoralis. litoralis এটি ল্যাটিন শব্দ যার র্অথ উপকূল।
f-2
আবিষ্কৃত নতুন প্রজাতি সম্পর্কে মাহমুদুল হাসান জানান, বাংলাদেশে মলিকুলার পর্যায়ে কাজ করে ব্যাঙের সঠিক প্রজাতি নির্ধারণ করার মত সুযোগ-সুবধিা এখনও তৈরি হয়নি যার ফলে অনাবষ্কিৃত রয়ে গেছে বাংলাদশেরে অপার সম্ভাবনার বৈচিত্র্যময় এম্পিবিয়ান সেক্টরটি। মৎস্য বিভাগের তথ্য মতে ১৯৯১-৯২ সালে বাংলাদেশ ৭৭১ মেট্রিক টন ব্যাঙের পা বিদেশে রফতানী করে ১১.০৯ কোটি টাকা আয় করে। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামের মত আমাদের দেশ নতুন আবিষ্কৃত ব্যাঙের প্রজাতিটি (Hoplobatarchus litoralis) মাছের মত কৃত্রিমভাবে চাষ করে ইউরোপ, আমেরিকার বাজারে রপ্তানী করে বাংলাদেশ প্রতি বছর কোট কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি প্রচুর সংখ্যক বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে।

এছাড়া ব্যাঙের চামড়া দিয়ে মানি ব্যাগ, হাড় দিয়ে ছোট ছোট মেয়েদের গহনা ও বিভিন্ন ধরণের শো-পিস তৈরি করা যায়। শুধু তাই নয় ব্যাঙের মাংস অনেক পুষ্টিকর খাবার যা উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে নিয়মিত খাবার মেনু। তাই ব্যাঙের মাংসকে প্রক্রিয়াজাত করে প্রোটিনের উৎস্য হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

উল্লেখ্য, মো. মাহমুদুল হাসান ইতোপূর্বে দুটি ব্যাঙের প্রজাতি নিয়ে গবেষণা করে সাফল্য পেয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি আরো দুটি নতুন প্রজাতির নিয়ে গবেষণার চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছেন।

No comments:

Post a Comment